AskBangla

panic-attack

1 January 2024

প্যানিক অ্যাটাক: হার্টের সমস্যা নাকি মানসিক রোগ?

লাইফস্টাইল

প্যানিক অ্যাটাক: হার্টের সমস্যা নাকি মানসিক রোগ?

প্যানিক অ্যাটাক একটি মানসিক রোগ। এটি একটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যাতে তীব্র আতঙ্ক বা ভয়ের অনুভূতি হয়। প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলি হঠাৎ এবং তীব্রভাবে শুরু হয় এবং সাধারণত কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলি হল:

  • হঠাৎ তীব্র আতঙ্ক বা ভয়ের অনুভূতি
  • বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি
  • শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট
  • ঘাম
  • ঠান্ডা লাগা বা গরম লাগা
  • মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা
  • ঘন ঘন প্রস্রাব
  • শরীরের অংশগুলিতে অবশ বা অনুভূতিহীনতা
  • মৃত্যুর ভয়

প্যানিক অ্যাটাক ও হার্টের সমস্যার পার্থক্যঃ

প্যানিক অ্যাটাক ও হার্টের সমস্যা একই মনে হতে পারে। নিচে কিছু লক্ষণ এর পার্থক্য দেওয়া হল।

লক্ষণপ্যানিক অ্যাটাকহার্টের সমস্যা
বুকে ব্যথাহ্যাহ্যা
বুকে চাপহ্যাহ্যা
শ্বাসকষ্টহ্যাহ্যা
মাথা ঘোরাহ্যাহ্যা
ঝাপসা দৃষ্টিহ্যানা
ঘামহ্যাহ্যা
কাঁপুনিহ্যাহ্যা
বমি বমি ভাবহ্যানা
বমিনানা
অজ্ঞান হয়ে যাওয়াহ্যানা
উদ্বেগহ্যানা
দুঃস্বপ্নহ্যানা
আতঙ্কহ্যানা
ঘুমের ব্যাঘাতহ্যানা
সামাজিক যোগাযোগে অনীহাহ্যানা
আত্মহত্যার চিন্তাহ্যানা

সতর্কতা

প্যানিক অ্যাটাক একটি ছদ্মবেশী রোগ। প্যানিক অ্যাটাকে কোনো ঝুঁকি নেই। তবে এর যে লক্ষণ সেই একই লক্ষণ নিয়ে কার্ডিয়াক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দুটো ক্ষেত্রেই লক্ষণ একই রকম। ঝুঁকি তখনই, যখন সত্যিকারের হার্টের সমস্যাকে প্যানিক অ্যাটাক মনে করা হবে। তাই যে কোনো লক্ষণকেই শুরুতেই প্যানিক অ্যাটাক বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। কার্ডিয়াক সমস্যা আছে কি না প্রথমে সেটি দেখতে হবে। সেটি না থাকলে পরে প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসা নিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সত্যিকারের হৃদপিণ্ডের সমস্যাকে প্যানিক অ্যাটাক বলে ভুল করেন অনেকে। তখন রোগীর ক্ষতির আশঙ্কা রয়ে যায়।

প্যানিক অ্যাটাক হলে প্রথমে করণীয়

প্যানিক অ্যাটাক হলে প্রথমে করণীয় হলো আক্রান্ত ব্যক্তিকে শান্ত করা। তাকে বোঝাতে হবে যে এটি কোনো মারাত্মক অসুস্থতা নয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে সুস্থ হয়ে উঠবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটি আরামদায়ক স্থানে বসতে দিন এবং তার শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করুন। তাকে গভীর শ্বাস নিতে বলুন এবং ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। প্যানিক অ্যাটাক সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে চলে যায়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে যতটা সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং এই সময়টি পার করে আসতে হবে। প্যানিক অ্যাটাক হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো ওষুধ দেওয়া উচিত নয়। তবে যদি আক্রান্ত ব্যক্তির ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ থাকে, তাহলে তার জন্য নির্ধারিত ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। প্যানিক অ্যাটাক থেকে সুস্থ হতে হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও থেরাপি গ্রহণ করতে হবে।

প্যানিক অ্যাটাক থেকে বাঁচার উপায়

প্যানিক অ্যাটাকের সঠিক কারণ অজানা, তবে এটি জিনগত, পরিবেশগত এবং মস্তিষ্কের রাসায়নিকের অসামঞ্জস্যের কারণে হতে পারে বলে মনে করা হয়। প্যানিক অ্যাটাক সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে বা প্রাথমিক বয়স্কদের মধ্যে শুরু হয়। এটি পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে। ওষুধ এবং থেরাপি উভয়ই কার্যকর হতে পারে। ওষুধগুলি সাধারণত প্যানিক আক্রমণের লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়। থেরাপিগুলি প্যানিক আক্রমণের কারণগুলি বুঝতে এবং তাদের মোকাবেলা করতে রোগীদের শেখায়।

প্যানিক অ্যাটাক একটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, তবে এটি চিকিৎসাযোগ্য। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে, বেশিরভাগ লোক এই অবস্থা থেকে ভালভাবে পুনরুদ্ধার করতে পারে।

উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলিতে প্যানিক অ্যাটাকের চিকিৎসা সম্পর্কে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে:

প্রথমত, প্যানিক অ্যাটাক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোগীদের লক্ষণগুলি বুঝতে এবং তাদের ভয় বা আতঙ্কের জায়গা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

দ্বিতীয়ত, কাউন্সিলিং বা কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির মতো মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই থেরাপিগুলি রোগীদের তাদের সমস্যাগুলি বুঝতে এবং তাদের আক্রমণগুলি মোকাবেলা করতে শেখাতে পারে। প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত হলে, আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনার লক্ষণগুলি মূল্যায়ন করতে এবং আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।